আজ ৯ সেপ্টেম্বর, কিংবদন্তি নজরুলসংগীত শিল্পী ফিরোজা বেগমের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৪ সালের এই দিনে তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। ভারতীয় উপমহাদেশে নজরুলসংগীতকে এক নতুন মাত্রা দেওয়া এই শিল্পীকে তার পরিবার এবং সংগীতপ্রেমীরা আজও গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছেন। তবে এই দিনটি পালনে রাজধানীতে কোনো আনুষ্ঠানিক আয়োজন নেই, পারিবারিকভাবেই তার স্বজনরা দিনটি পালন করছেন।
রাষ্ট্রীয়ভাবে স্মরণ না করার আক্ষেপ
ফিরোজা বেগমের পুত্র এবং বাংলাদেশ মিউজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বাবমা) সভাপতি হামিন আহমেদ বলেন, "প্রতিবারের মতো পারিবারিকভাবেই মায়ের জন্ম ও মৃত্যুদিন আমরা স্মরণ করি। এবারও তাই হবে।" তিনি আক্ষেপ করে বলেন যে, রাষ্ট্রীয়ভাবে এই গুণী শিল্পীকে স্মরণ করা হয় না, যা দুঃখজনক। তিনি তার মায়ের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
বর্ণাঢ্য কর্মজীবন
১৯৩০ সালের ২৮ জুলাই ফরিদপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন ফিরোজা বেগম। শৈশবেই তার মধ্যে সংগীতের প্রতি গভীর আগ্রহ দেখা যায় এবং মাত্র ১০ বছর বয়সে তিনি কবি কাজী নজরুল ইসলামের কাছে সংগীতের তালিম নেন। ১৯৪২ সালে তার প্রথম রেকর্ড এইচএমভি থেকে প্রকাশিত হয়। তিনি শুধু নজরুলসংগীত নয়, আধুনিক গান, গজল, কাওয়ালি এবং ভজনসহ বিভিন্ন ধরনের গানেও পারদর্শী ছিলেন। তার কালজয়ী গান 'দূরদ্বীপবাসিনী' ও 'মোমের পুতুল' আজও সংগীতপ্রেমীদের কাছে সমান জনপ্রিয়। তিনি সারা বিশ্বে ৩৮০টির বেশি একক সংগীতানুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন।
সম্মান ও স্বীকৃতি
ফিরোজা বেগম তার দীর্ঘ সংগীত জীবনে অসামান্য অবদানের জন্য অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৭৯), একুশে পদক, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র পুরস্কার, সত্যজিৎ রায় পুরস্কার, এবং নজরুল আকাদেমি পদক। ভারতের বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডি. লিট ডিগ্রিও প্রদান করেছিল।