আবারও আলোচনার কেন্দ্রে কনটেন্ট ক্রিয়েটর রিপন মিয়া। মঙ্গলবার সারাদিন তাঁকে ঘিরে সরগরম ছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। একদিকে টেলিভিশনের প্রতিবেদনে রিপনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ, অন্যদিকে তাঁর মাকে জড়িয়ে কান্নার ভিডিও, দুই বিপরীত দৃশ্য একসঙ্গে আলোচনার ঝড় তোলে অনলাইনে।

দুপুরে একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদনে রিপনের মা অভিযোগ করেন, ‘খুব কষ্ট করে মানুষ করছি, কিন্তু এখন পরিচয় দেয় না। আমরা গরিব। পরিচয় দিলে যদি ওর মানসম্মান না থাকে!’ প্রতিবেদনে বলা হয়, জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা রিপন এখন আর মা-বাবার সঙ্গে থাকেন না; স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আলাদা বাড়িতে থাকেন এবং বাবা-মায়ের ভরণপোষণ দেন না।

সংবাদটি প্রচারের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। কেউ লিখেছেন, ‘খ্যাতি মানুষকে মানুষ থাকতে দেয় না’, আবার কেউ বলেছেন, ‘মায়ের কষ্টের কান্না শুনে রিপনের ভিডিও দেখা যায় না।’

তবে রাতেই পরিস্থিতি বদলে যায়। ছড়িয়ে পড়ে নতুন একটি ভিডিও, যেখানে দেখা যায়, রিপন মিয়া মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন। আঞ্চলিক টানে বলতে শোনা যায়, ‘তোমারে দেহি না আমি? আব্বারে দেহি না আমি? তুমি ইড্ডা কী করলা? আমার জীবনডা শেষ করলা!’ এই দৃশ্য দেখে কেঁদে ওঠেন তাঁর মা-ও। ভিডিওটি প্রকাশের পর অনেকেই মন্তব্য করেন, ‘মা-ছেলের সম্পর্ক সবচেয়ে পবিত্র। সামান্য ভুল বোঝাবুঝি মিটে যাক।’

প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলার সময় রিপন বলেন, ‘এই ঘটনা নিয়ে কথা বলার মানসিক অবস্থায় আমি নেই। তবে খুব শিগগিরই সব প্রশ্নের উত্তর দেব। আমি সব সময় আমার পরিবারকে দেখেছি, ভবিষ্যতেও দেখব। যদি কোনো ঘাটতি থেকে থাকে, তা পূরণ করব। কিন্তু আমার সরল বাবা-মাকে নিয়ে যারা ব্যবসা করেছে, তাদের বিচার একদিন হবে।’

এর আগে সোমবার দুপুরে নিজের ফেসবুক পেজে রিপন অভিযোগ করেন, ‘কয়েকজন টেলিভিশন সাংবাদিক কোনো অনুমতি ছাড়াই আমার বাড়িতে প্রবেশ করে। ঘরে নারী সদস্য থাকা সত্ত্বেও ভিডিও ধারণ করে পরিবারকে হেনস্তা করেছে তারা।’

নেত্রকোনার কাঠমিস্ত্রি রিপন মিয়া ২০১৬ সালে হঠাৎই আলোচনায় আসেন একটি ভাইরাল ভিডিওর মাধ্যমে ‘বন্ধু তুমি একা হলে আমায় দিয়ো ডাক,/ তোমার সাথে গল্প করব আমি সারা রাত।’ সেই সরল ভিডিওর আবেগ ছুঁয়ে যায় লাখো মানুষের মন। এরপর থেকে নিয়মিত আঞ্চলিক ঢঙে ও হাস্যরসাত্মক ভিডিও বানিয়ে জনপ্রিয়তা পান তিনি। বর্তমানে তাঁর ফেসবুক অনুসারী প্রায় ১৯ লাখ, বিজ্ঞাপন, সিনেমা প্রচারণা এবং কিছু নাটকেও অংশ নিয়েছেন এই কনটেন্ট নির্মাতা।