'ওয়েনসডে' সিরিজের প্রথম সিজন বিশ্বব্যাপী তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এবার এসেছে এর দ্বিতীয় সিজন, যা দুই কিস্তিতে মুক্তি পেয়েছে। প্রথম সিজনের মতো দ্বিতীয় সিজনও দর্শকদের মন জয় করতে পেরেছে কি না, তা নিয়ে আলোচনা করা হলো এই প্রতিবেদনে।
গল্পের বিস্তৃতি ও গভীরতা
প্রথম সিজনটি নেভারমোর একাডেমির একটি হত্যা-রহস্যকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয় সিজনে গল্পটি আরও বিস্তৃত হয়েছে। 'ওয়েনসডে' (জেনা ওর্তেগা) তার অতিপ্রাকৃত ক্ষমতাকে শাণিত করার চেষ্টা করতে গিয়ে একজন ক্রমিক খুনির সঙ্গে প্রাণঘাতী খেলায় জড়িয়ে পড়ে। নেভারমোরে ফিরে সে বুঝতে পারে, সবকিছু আগের মতো নেই। সে এখন একজন তারকা। নতুন রহস্য, বিশ্বাসঘাতকতা, এবং আত্মপরিচয়ের জটিলতা নিয়ে গল্পটি এগিয়ে চলে।
এই সিজনে গল্পের বিস্তৃত পরিধি থাকা সত্ত্বেও এর ভারসাম্য বজায় ছিল। গোপন প্রকল্প, মানসিক হাসপাতাল, পারিবারিক ইতিহাস এবং একের পর এক বিপদ - সবকিছুই ওয়েনসডের জগতকে আরও বিশদে তুলে ধরেছে।
জেনা ওর্তেগার অভিনয় ও চরিত্রের বিকাশ
জেনা ওর্তেগা আবারও প্রমাণ করেছেন যে, তিনি ছাড়া 'ওয়েনসডে' অসম্পূর্ণ। তার ঠান্ডা চাহুনি, আবেগহীনতা এবং মানবিকতার মিশ্রণ দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। এবারের সিজনে অনেক তারকার ভিড়েও জেনা তার অভিনয় দিয়ে সব আলো কেড়ে নিয়েছেন। ওয়েনসডের চরিত্রটি আরও পরিণত হয়েছে। তার কাছে জীবন বাঁচানোর চেয়ে ধাঁধার সমাধান করাই যেন বড় বিষয়।
এমা মায়ার্সের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব এই সিজনে আরও গভীর হয়েছে, যা তাদের বন্ধুত্বকে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। ওয়েনসডের মা-বাবা মর্টিসিয়া ও গোমেজ অ্যাডামসের উপস্থিতি গল্পে গভীর প্রভাব ফেলেছে।
কিছু সীমাবদ্ধতা
দ্বিতীয় সিজনটি প্রথম সিজনের মতো আইকনিক নাচের দৃশ্য বা মনে রাখার মতো সংলাপ উপহার দিতে পারেনি। কিছু রোমান্টিক ট্র্যাক অপ্রয়োজনীয়ভাবে দীর্ঘায়িত হয়েছে, যা কিছুটা একঘেয়ে লাগতে পারে। নতুন খলনায়কও প্রত্যাশা অনুযায়ী শক্তিশালী ছিল না, ফলে রহস্য সমাধানের আগেই দর্শক তা অনুমান করতে পারে।
তবে টিম বার্টনের অসাধারণ নির্মাণশৈলী, নিখুঁত প্রোডাকশন ডিজাইন এবং ক্যামেরার কাজ এই সীমাবদ্ধতাগুলোকে অনেকটাই পুষিয়ে দিয়েছে। পিয়ানো ও ভায়োলিনের সুর গল্পের সাসপেন্সকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। সব মিলিয়ে, 'ওয়েনসডে ২' তার মূল শক্তি অর্থাৎ গথিক আবহ, ডার্ক হিউমার এবং টানটান উত্তেজনা ধরে রাখতে পেরেছে। চরিত্রগুলোর মধ্যে সম্পর্ক ও আবেগ আরও গভীর হওয়ায় এটি দর্শকদের প্রত্যাশা পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে।