অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুরুষতন্ত্র এবং তার জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পুরুষের প্রভাব নিয়ে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে, তার আপত্তি পুরুষদের প্রতি নয়, বরং সমাজে প্রচলিত পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার প্রতি।

বাঁধন তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, “আমাকে নিয়ে প্রায়ই এক বড় ভুল বোঝাবুঝি হয়। অনেকে ভাবে আমি নাকি পুরুষদের পছন্দ করি না। এটা সত্যি নয়। আমি যা পছন্দ করি না, তা হলো আমাদের এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজ।” তিনি আরও বলেন যে, তিনি পুরুষ মানুষকে ঘৃণা করেন না, কিন্তু পুরুষতন্ত্রকে কখনোই মেনে নেন না।

বাঁধনের জীবনের কিছু ইতিবাচক পুরুষদের প্রভাব সম্পর্কে তিনি লিখেছেন। প্রথমেই তিনি তার বাবার কথা বলেন, যিনি নানা উপায়ে তাকে গড়ে তুলেছেন। এছাড়াও, 'রেহানা' চলচ্চিত্রের পরিচালক আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন যে এই দুজন পুরুষ তার ব্যক্তিত্ব ও শিল্পীজীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছেন।

তিনি তার দুই ভাইয়ের কথা উল্লেখ করে বলেন যে তারা তার জীবনের ভরসা। বিশেষ করে ছোট ভাই রাশা তার সেরা বন্ধু। তিনি আরও বলেন যে, বাবা-মা যখন তার পাশে দাঁড়াতে পারেননি, তখন তার আরেক ভাই পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন, যা তিনি কখনো ভুলবেন না।

উত্তরাধিকার প্রসঙ্গে বাঁধন জানান, তার দুই ভাই শরিয়তের নিয়ম না মেনে সমানভাবে তাদের সম্পত্তি ভাগ করে নিয়েছিলেন। তিনি লিখেছেন, “আমি আসলে পছন্দ করি না যে তারা যেন আমাকে দিয়ে দিয়েছে, যেন সেটা তাদের ছিল, আমার নয়। কিন্তু এটাই আমাদের সিস্টেমের বাস্তবতা। আর তারা সেটাকে ন্যায্যতা ও ভালোবাসা দিয়ে সামলেছে।”

তবে বাঁধনের জীবনে সব অভিজ্ঞতা ইতিবাচক ছিল না। এমনও কিছু পুরুষ তার জীবনে এসেছেন, যারা ছিলেন হিংস্র ও অমানবিক। কিন্তু তাদের প্রতিও তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তার মতে, তারা যতই তাকে ভাঙতে চেয়েছে, তাদের নিষ্ঠুরতা তাকে ততই অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আগুনের মতো জ্বালিয়ে দিয়েছে।

শেষে বাঁধন আবারও নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে বলেন, “তাই ভুল বোঝো না, আমি পুরুষদের অপছন্দ করি না। আমি অপছন্দ করি পুরুষতন্ত্রকে। আর হ্যাঁ, আমি পুরুষদের ভালোবাসি।”