“এই খবরে আমি বিব্রত”: খায়রুল বাসার অপেশাদারিত্বের অভিযোগে হতবাক, জানালেন পুরো ঘটনা
বিস্তারিত রিপোর্ট:
বর্তমানে সরকারি অনুদানের সিনেমা ‘জীবন আমার বোন’–এর শুটিং নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন অভিনেতা খায়রুল বাসার। মুক্তির অপেক্ষায় আছে তার অভিনীত *‘বনলতা সেন’*সহ আরও দুটি চলচ্চিত্র। এর মাঝেই হঠাৎ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে নিয়ে অপেশাদার আচরণের অভিযোগ ছড়িয়ে পড়ে, যা নিয়ে অভিনেতা নিজেই জানালেন বিব্রত এবং হতবাক হওয়ার কথা।
গত শনিবার থেকে একটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের বিষয়ে খায়রুল বাসারের ‘অপেশাদার আচরণ’ নিয়ে খবর ছড়ায়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমার ক্যারিয়ারে কখনো এমন রেকর্ড নেই। কেউ আমার পেশাদারিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলবে, ভাবতেও পারিনি। মিটিংয়ের তিন দিন পর আমি সিদ্ধান্ত জানাই, আমার জটিলতা সম্পর্কে খোলাখুলি বলি। শুটিং শুরু হওয়ার কথা সেপ্টেম্বরে। তখনকার ভেতরেই জানিয়ে দিয়েছি আমি কাজটি করতে পারছি না। এটা কি অপেশাদারিত্ব?”
তিনি আরও বলেন, “উনারা আমাকে কনফার্মেশন মানি পাঠিয়েছিলেন, আমি সেটা আন্তরিকতা ও গুরুত্ব হিসেবে নিয়েছি। কিন্তু কাজটা করতে না পারায় আমি সেই অর্থ ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখনও পর্যন্ত উনারা আমাকে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পাঠাননি। আমি একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেছি।"
খায়রুল বাসার জানান, ২২ জুলাই কলকাতা থেকে একটি সিনেমার টিম তার সঙ্গে দেখা করতে আসে। সিনেমার নাম ‘ভালোবাসার মরশুম’। তারা তাকে নিয়েই সিনেমাটি নির্মাণ করতে চায়। তিনি তখনই তাদের জানান, সেপ্টেম্বরে তার আগেই শিডিউল দেওয়া আছে। পরে অনেক আলোচনা ও সময় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেন।
“তারা তখনই সব ফাইনাল করতে চায়, এমনকি কোনো লিখিত চুক্তি ছাড়াই আমাকে পারিশ্রমিকের এক-চতুর্থাংশ দিয়ে দেয়। এরপরও আমি বলি, আমাকে একটু সময় দিতে হবে। কিন্তু শিডিউল ম্যানেজ করতে না পারায় আমি অনিচ্ছাসত্ত্বেও সরে দাঁড়াই এবং বলি, কাউকে কাস্ট করতে পারেন। তখনই বলি, আপনারা আমার দেওয়া টাকা ফেরত নিয়ে নিন,” — বলেন তিনি।
এই বিষয়ে খায়রুল বলেন, “হঠাৎ করেই দেখি শুক্রবার নিউজ হয়ে গেছে। আমাকে নিয়ে লেখা হচ্ছে যে আমি ফোন ধরছি না, টাকা ফেরত দিচ্ছি না। অথচ পরিচালক আমাকে একবার কল করেছেন, আমি শুটিংয়ে থাকায় ধরতে পারিনি, পরে তাকে টেক্সট করেছি। কিন্তু এরপরও কোনো জবাব আসেনি। এমন ভিত্তিহীন অভিযোগে আমি খুবই বিব্রত।
এই সিনেমার গল্প ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ-পূর্ব সময়কে কেন্দ্র করে। সমাজে বৈষম্য, নির্যাতনের প্রেক্ষাপটে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনসংগ্রাম এবং যুদ্ধের ছাপ ফুটে উঠেছে। এই চলচ্চিত্রে মূল চরিত্রে অভিনয় করছেন খায়রুল।
সাক্ষাৎকারে খায়রুল বাসার বলেন, “আমি সিনেমায় অভিনয় করতে ভালোবাসি। শুরু থেকে গল্প ও চরিত্রকে গুরুত্ব দিয়েছি। তবে আজকাল তরুণ অভিনয়শিল্পীরা ভালো কাজের সুযোগ খুব কমই পান। আমাদের দেশে অনেক প্রতিভাবান শিল্পী আছেন, যাদের প্রশংসা করা হয়, কিন্তু মূল্যায়ন হয় না।”
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “ভারতের ‘সাইয়ারা’ সিনেমার তরুণদের মতো আমাদের দেশের তরুণ শিল্পীদের কেউ ভাবেন না। তরুণ বয়সে যখন সবচেয়ে কাজ করার সময়, তখনই তারা বসে থাকেন। শিল্পী তৈরি করতে হয়, হতাশ করতে নয়।”
“আমার ক্যারিয়ারে কখনো এমন ঘটনা ঘটেনি। আমি আমার কাজ নিয়ে সবসময় আন্তরিক। যারা আমাকে নিয়ে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছেন, তাদের উচিত ছিল আগে আমার বক্তব্য জানা। আমি চাই, আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে মেধার সঠিক মূল্যায়ন হোক, যেন শিল্পীরা হতাশ না হয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারেন।