দীর্ঘ সময় অ্যাকশন আর থ্রিলার সিনেমার ভিড়ে হারিয়ে যাওয়া রোমান্টিক আবেগকে আবার ফিরিয়ে এনেছে দক্ষিণ কোরিয়ান নতুন রোমান্টিক কমেডি ‘লাভ আনট্যাংলড’। ২৯ আগস্ট নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাওয়া এই ছবিটি ইতিমধ্যেই দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছে, যা ভালোবাসা, বন্ধুত্ব ও নস্টালজিয়ার এক দারুণ মিশ্রণ।
সিনেমাটির গল্প ১৯৯৮ সালের প্রেক্ষাপটে গড়ে উঠেছে। প্রধান চরিত্র পার্ক সে-রি, একজন প্রাণবন্ত হাইস্কুল ছাত্রী, যে তার কোঁকড়ানো চুল নিয়ে হীনমন্যতায় ভোগে। তার ক্রাশ স্কুলের জনপ্রিয় ছাত্র কিম হিউনের প্রতি থাকলেও, ভাগ্য তাকে নিয়ে আসে নতুন ছাত্র হান ইউন-সকের জীবনে। এক দুর্ঘটনায় ইউন-সককে বাঁচানোর পর সে-রির সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয়, যা ধীরে ধীরে এক ভিন্নরকম ভালোবাসার সম্পর্কে পরিণত হয়।
পরিচালক নামকুং সান অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ৯০-এর দশকের আবহ, টিনএজ বয়সের দোটানা, পারিবারিক দ্বন্দ্ব এবং প্রেমের সরল আবেগ ফুটিয়ে তুলেছেন। গং মিয়ং (ইউন-সক) এবং শিন ইঊন-সু (সে-রি) তাদের সাবলীল অভিনয়ের মাধ্যমে সেই সময়ের নিষ্পাপ ভালোবাসা ও কষ্টকে বাস্তব করে তুলেছেন।
এই চলচ্চিত্রে শুধু প্রেমই নয়, বরং বাবা-মায়ের প্রত্যাশা, পারিবারিক সহিংসতা, বন্ধুত্ব এবং আত্ম-অন্বেষণের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোও উঠে এসেছে। বিশেষভাবে, ইউন-সক এবং তার মায়ের সম্পর্কটি বেশ আবেগঘন। অন্যদিকে, চুল সোজা করার স্বপ্নকে ঘিরে সে-রির জার্নিটি ছবিটিকে একটি স্বতন্ত্র মাত্রা দিয়েছে।
‘লাভ আনট্যাংলড’ ছবির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো এর নস্টালজিয়া। ৯০-এর দশকের গান, পোশাক, বন্ধুত্ব আর প্রেমের সহজ-সরল প্রকাশ দর্শককে নিজেদের কৈশোরের দিনগুলো মনে করিয়ে দেয়। শেষ দৃশ্যে যখন ইউন-সক ও সে-রির পুনর্মিলন ঘটে, তখন বোঝা যায় ভালোবাসা যতই জটিল হোক না কেন, একসময় তা ঠিকই গুছিয়ে নেয়।
সব মিলিয়ে, যারা থ্রিলার বা অ্যাকশন থেকে একটু ভিন্ন কিছু দেখতে চান, তাদের জন্য ‘লাভ আনট্যাংলড’ একটি নিখুঁত রিফ্রেশমেন্ট। এটি দর্শকদের হাসাবে, কাঁদাবে এবং ভালোবাসার প্রকৃত অর্থ আবারও মনে করিয়ে দেবে।