ভারতের কিংবদন্তি অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর যখন ২০২৩ সালে প্রথমবার নিজের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার কথা প্রকাশ্যে আনেন, তখন তার পরিবার যেমন ভেঙে পড়েছিল, তেমনি হতবাক হয়েছিলেন ভক্তরা। তবে সৌভাগ্যবশত, তিনি সেই মরণব্যাধি থেকে বেঁচে যান।
সম্প্রতি নায়নদীপ রক্ষিতকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শর্মিলা ঠাকুরের মেয়ে সোহা আলি খান জানান, তার জীবনের সবচেয়ে বড় ভয় হলো প্রিয়জনদের অকাল মৃত্যু। তিনি বলেন, “জীবনের অন্য সব সমস্যা সামলানো যায় কিন্তু প্রিয়জনদের হারানোর ভাবনাটা আমাকে সবসময়ই তাড়িয়ে বেড়ায়।”
এই ভয়টি এসেছে তার জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে, যখন তার মা শর্মিলা ঠাকুরের ফুসফুস ক্যান্সার ধরা পড়ে। সোহার কথায়, "মার ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার সময়টা আমার পরিবারে অনেক ক্ষতি হয়েছে। আমি এবং আমরা সকলেই সেসময় খুবই টেনশনের মধ্যে দিয়ে কাটিয়েছি। মনে হচ্ছিল পরিবারটা আবার ভেঙে যাচ্ছে।"
প্রাথমিক শনাক্তকরণই সাফল্যের চাবিকাঠি
সৌভাগ্যবশত, শর্মিলা ঠাকুরের ক্যান্সার ছিল ‘স্টেজ-জিরো’, অর্থাৎ একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে। সোহা বলেন, "ফুসফুস ক্যান্সারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো প্রতিরোধ ও প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা। ঈশ্বরের কৃপায় সেটা সম্ভব হয়েছিল সময়মত, আর তাই আজ মা একদম ভালো আছেন।"
চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে সোহা জানান, "আমার মা তাদের মধ্যে একজন, যাদের প্রাথমিক অবস্থায় ফুসফুস ক্যান্সার ধরা পড়ে। তার চিকিৎসায় কোনো কেমোথেরাপি লাগেনি। শুধু অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সেটা কেটে ফেলা হয়। এখন তিনি পুরোপুরি সুস্থ!"
চিকিৎসকরা বলছেন, স্টেজ-জিরো ফুসফুস ক্যান্সার খুবই বিরল। এই অবস্থায় অস্বাভাবিক কোষগুলো শুধু ফুসফুসের ভেতরের আস্তরণে থাকে এবং শরীরের অন্য কোথাও ছড়ায় না। তাই দ্রুত শনাক্ত হলে চিকিৎসা তুলনামূলক সহজ এবং সফলতার হারও বেশি। উল্লেখ্য, সোহা আলি খানের পরিবারে ফুসফুসজনিত অসুস্থতার ইতিহাস রয়েছে; তার বাবা, কিংবদন্তি ক্রিকেটার মানসুর আলি খান পতৌদি, ২০১১ সালে তীব্র ফুসফুস সংক্রমণ ও শ্বাসকষ্টে মারা যান।