ম্রুণাল ঠাকুর। কিছুদিন আগেই তিনি বিপাশা বসুকে নিয়ে কটাক্ষ করে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। এবার তাঁর মন্তব্যে আঘাত লাগল বলিউডের অন্যতম শীর্ষ নায়িকা আনুশকা শর্মার নামের সঙ্গেও।
সম্প্রতি এক পডকাস্ট সাক্ষাৎকারে ম্রুণাল জানান, সালমান খানের সুপারহিট ছবি ‘সুলতান’ (২০১৬)-এর মাধ্যমে তাঁর বলিউডে অভিষেক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি নিজেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন, কারণ সে সময় নিজেকে প্রস্তুত মনে করেননি। শেষ পর্যন্ত ছবিতে নায়িকা হন আনুশকা শর্মা, আর ছবিটি বক্স অফিসে বিরাট সাফল্য এনে দেয়। তবে এখানেই শেষ নয়। ম্রুণাল বলেন, “এ রকম অনেক ছবি আমি না করেছি। তখন আমি প্রস্তুত ছিলাম না। কিন্তু আমার এই কথাতেই হয়তো বিতর্ক হবে। ছবিটি সুপারহিট হলেও অভিনেত্রীর এর থেকে কোনো ফায়দা হয়নি। তিনি ওই ছবি করেও এগোতে পারেননি। আমার মনে হয়েছিল, আমি যদি সে সময় ছবিটি করতাম, তাহলে হয়তো নিজেকে হারিয়ে ফেলতাম। আজ তিনি কাজ করছেন না, কিন্তু আমি কাজ করছি এটা আমার কাছে জয়।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমি তাৎক্ষণিক খ্যাতি চাই না। যা দ্রুত পাওয়া যায়, তা দ্রুত হারিয়েও যায়।” যদিও নাম উচ্চারণ করেননি, ইঙ্গিত যে আনুশকার দিকেই, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
আনুশকা শর্মার বলিউড ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল শাহরুখ খানের বিপরীতে ‘রব নে বনা দি জোড়ি’ (২০০৮) দিয়ে। প্রথম ছবিতেই দর্শকের হৃদয় জয় করেন তিনি। এরপর ‘ব্যান্ড বাজা বারাত’, ‘জব হ্যারি মেট সেজাল’, ‘এ দিল হ্যায় মুশকিল’ সহ একাধিক হিট ছবিতে অভিনয় করেছেন। শুধু অভিনেত্রী নয়, প্রযোজক হিসেবেও আনুশকা দারুণ সফল। তাঁর প্রযোজিত ‘এনএইচ১০’, ওয়েব সিরিজ ‘পাতাল লোক’ এবং চলচ্চিত্র ‘বুলবুল’ তাঁকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। অন্যদিকে, ম্রুণাল ছোটপর্দা থেকে শুরু করে বলিউডে জায়গা করে নেন। ‘সুপার ৩০’, ‘জার্সি’, ‘সীতা রামম’ ছবিতে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হলেও এখনও শীর্ষ সারির নায়িকাদের কাতারে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি। তাই অনেকের মতে, আনুশকার তুলনায় ম্রুণালের সাম্প্রতিক মন্তব্য অনেকটা আত্মপ্রচারের কৌশলই।
বলিউডে নারী তারকাদের মধ্যে তুলনা নতুন কিছু নয়। আশির দশকে হেমা মালিনী–রেখা, নব্বইয়ের দশকে শ্রীদেবী–মাধুরী দীক্ষিত, পরবর্তী সময়ে ক্যাটরিনা কাইফ–প্রিয়াঙ্কা চোপড়া কিংবা দীপিকা পাড়ুকোন,কারিনা কাপুর প্রতিটি যুগেই এই প্রতিযোগিতা ছিল। কেউ কাজের মাধ্যমে নিজের অবস্থান শক্ত করেছেন, কেউ আবার কটাক্ষ উপেক্ষা করে নীরব থেকেছেন। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট এই প্রতিযোগিতা দর্শকের কৌতূহল বাড়ালেও শিল্পীদের ভাবমূর্তি অনেক সময় ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
ম্রুণালের মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। আনুশকার ভক্তরা একের পর এক প্রতিক্রিয়া জানান। একজন লিখেছেন, “অভিনয় থেকে বিরতি নেওয়া আনুশকার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তাঁকে কেউ হারিয়ে দেয়নি।” আরেকজনের মতে, “দীর্ঘদিন কাজ না করলেও আনুশকার অবস্থান আজও অটল। ম্রুণাল সেই জায়গায় পৌঁছাতে পারবেন কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন।” তবে কিছু দর্শক ম্রুণালের পক্ষ নিয়ে বলেন, তিনি হয়তো নিজের দৃষ্টিভঙ্গিই তুলে ধরেছেন। তবে তাঁর বক্তব্যের ধরনই মূলত বিতর্ক তৈরি করেছে।