‘পরিণীতা’ -বিদ্যা বালানের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া চলচ্চিত্রের ২০ বছর উদ্‌যাপন

বিদ্যা বালানের ক্যারিয়ারে ‘পরিণীতা’ ছিল সেই চলচ্চিত্র যা রাতারাতি তাকে তারকাখ্যাতি এনে দিয়েছিল। ২০০৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবি তার প্রথম হিন্দি ছবি হিসেবে অভিষেক করেছিল এবং একই সঙ্গে দর্শকদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী স্থান করে নিয়েছিল। সম্প্রতি ছবিটির ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে মুম্বাইয়ের এক প্রেক্ষাগৃহে আয়োজন করা হয় বিশেষ উদ্‌যাপন অনুষ্ঠান। এই রাতে উপস্থিত ছিলেন চিত্রনির্মাতা বিধু বিনোদ চোপড়া, বিদ্যা বালান, রেখা, দিয়া মির্জা, গায়িকা শ্রেয়া ঘোষাল, সংগীত পরিচালক শান্তনু মৈত্রসহ চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত অনেকে।

উদ্‌যাপনের রাতটি ছিল রঙিন ও আনন্দময়। বিদ্যা বালানের ধুনুচি নাচ, হাসি-মজা, ছবিকে ঘিরে স্মৃতিচারণা এবং বিশেষ আকর্ষণ ছিল শ্রেয়ার গান সহ বিদ্যা ও রেখার নাচ। আজ বুধবার ছবিটি আবার রুপালি পর্দায় মুক্তি পাচ্ছে। ‘পরিণীতা’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হয়েছিল। প্রয়াত বাঙালি পরিচালক প্রদীপ সরকারের হাতেখড়ি হিসেবে এটি তার পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ছবি হিসেবে বিবেচিত।

উল্লেখযোগ্য যে, ছবিটি মুক্তি পাওয়ার সময় মুম্বাইয়ে তুমুল বৃষ্টির মধ্যে অনুষ্ঠানিকতা চলছিল, আর রাত্রি ছিল ঝলমলে। মূল চরিত্রে ছিলেন বিদ্যা বালান, সাইফ আলী খান, সঞ্জয় দত্ত, দিয়া মির্জা, রাইমা সেন এবং সব্যসাচী চক্রবর্তী। ‘পরিণীতা’ ছবির গান “ক্যায়সি প্যাহেলি জিন্দেগানি” এবং রেখার নাচ দর্শকপ্রেমীদের কাছে বিশেষ আনন্দের অংশ হয়ে দাঁড়ায়।

উদ্‌যাপনের রাতটি আরও স্মরণীয় হয়ে ওঠে রেখার আবেগময় স্মৃতিচারণার মাধ্যমে। রেখা জানান, তিনি ছবিতে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন যখন তিনি বিদ্যার ভিন্নধর্মী সৌন্দর্য এবং অভিনয়শৈলী দেখেন। তিনি বলেন, “বিধু বিনোদ চোপড়া আমাকে জানান যে মূল চরিত্রে সাইফ, সঞ্জয় ও বিদ্যা রয়েছেন। বিদ্যা কে জানতে চাইলে তিনি কিছু ফুটেজ পাঠান। সেই ফুটেজে আমি বিদ্যাকে দেখি এবং সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিই যে ছবিটিতে আমি অভিনয় করব। বিদ্যার অপ্রচলিত সৌন্দর্য ও গভীরতা আমাকে মুগ্ধ করেছে।” তিনি আরও বলেন, “বিদ্যা বালান আমার কাছে চিরকালই একমাত্র ‘পরিণীতা’ হয়ে থাকবেন।”

ছবির সেটের বাইরে রেখা বিদ্যার সঙ্গে সম্পর্কের বন্ধুত্বপূর্ণ মুহূর্তও শেয়ার করেন। তিনি বলেন, “এই ছবির মাধ্যমে সবাই সফলতা পেয়েছে, আমিও পেয়েছি। তবে বিদ্যা তারকা হয়ে উঠেছিল। ‘ক্যায়সি প্যাহেলি’ গান শুটিংয়ের সময় সে সব খুঁটিনাটি বিষয় নজর রাখত, আমার ভ্যানিটি ভ্যানে এসে হাত ধরে বলে, ‘আমি আপনার থেকে অনেক কিছু শিখেছি।’ আমি আজও বলতে চাই, বিদ্যা আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে।”

বিদ্যা বালানও আবেগপ্রবণ হয়ে স্মৃতিচারণা করেন। তিনি বলেন, “ছবিটা আমার জীবন বদলে দিয়েছিল। আমার মনে হয়, আমি অভিনয় করার জন্যই জন্মেছিলাম। এই একটি স্বপ্ন আমি দেখেছিলাম, আর ২০ বছর ধরে সেই স্বপ্নের ওপর ভর করে বাঁচছি। আমি প্রদীপ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ, যিনি আমার জীবনকে নতুন দিশা দিয়েছেন। এছাড়া বিধু বিনোদ চোপড়া এবং ছবির সঙ্গে যুক্ত সকলকে ধন্যবাদ জানাই।”

‘পরিণীতা’র ২০ বছর উদ্‌যাপন ছিল স্মৃতি, সেলিব্রেশন এবং আবেগের এক অনন্য মেলবন্ধন, যা দেখালো কতটা প্রভাবশালী হতে পারে একটি চলচ্চিত্র কোনো অভিনেত্রীর জীবনে।